হাড় ক্ষয় হওয়ার কারণ ও প্রতিরোধ করার উপায়
🍂বর্তমান সময়ে হাড় ক্ষয় সমস্যাটিতে সবাই ভুগছেন, এটি একটি বড় সমস্যার কারণ হয়ে
দাঁড়িয়েছে সবার কাছে। সবার মনে একই প্রশ্ন, হাড় ক্ষয়ের কারন কি?! এটা থেকে
কিভাবে মুক্তি পাওয়া যায়?! বয়স বাড়ার সাথে সাথে বিশেষ করে ৪০ বছর বয়স থেকে এই সমস্যাটি দেখা যায়।
✖ ভুল লাইফস্টাইলে
চলা।
✖ পর্যাপ্ত শারীরিক পরিশ্রমের অভাবে।
✖ ধূমপান করা।
✖ মদ্যপান করা।
✖ এস্ট্রোজেন হরমোন কমে যাওয়া।
✖ টেস্টোস্টেরোন হরমোন কমে যাওয়া।
✖ ক্যালসিয়াম।
হাড় ক্ষয় ২টি পরীক্ষার মাধ্যমে সঠিকভাবে জানা যায়,
✔ হাড়ের এক্স-রে পরীক্ষা।
✔ হাড়ের ঘনত্ব পরিক্ষা।
হাড় ক্ষয় একবার শুরু হলে, এটা থেকে মুক্তি পাওয়া অনেক কঠিন। তাই হাড় ক্ষয়
প্রতিরোধ করতে কয়েকটি বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে। কোন লাইফস্টাইলে চলা
হচ্ছে , কোন ধরনের খাবার খাওয়া হচ্ছে, কোন ধরনের ওষুধ সেবন করা হচ্ছে এগুলোর
প্রতি খেয়াল রাখতে হবে।
হাড় ক্ষয় প্রতিরোধে প্রয়োজনঃ
✔ ক্যালসিয়াম, ভিটামিন-ডি, ভিটামিন-কে২ এগুলো প্রতিদিন গ্রহণ
করা।
✔ সূর্যের আলোতে শরীরকে উষ্ণ করা।
✔ নিয়মিত ব্যায়াম করা।
✔ ধূমপান ও অ্যালকোহল পরিত্যাগ করা।
সুস্থ হাড়ের জন্য প্রয়োজন ক্যালসিয়াম। মানুষের শরীরে ৯৯ শতাংশ ক্যালসিয়াম
দাঁত ও হাড়ে থাকে। দেহে ক্যালসিয়ামের অভাব হলে দাঁত ও হাড় ক্ষয় হতে শুরু করে।
তাই প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার থাকতে
হবে।তাহলে হাড় ক্ষয় প্রতিরোধ করা সম্ভব।
ক্যালসিয়াম পাওয়া যায় ২টি খাবারেঃ
১। উদ্ভিজ্জ খাবার। ২। প্রা্ণিজ খাবার। যেসব প্রা্ণিজ খাবারে
ক্যালসিয়াম থাকেঃ দুধ,পনির, টকদই, কাঁটাযুক্ত ছোট মাছ, ইত্যাদি। যেসব
উদ্ভিজ্জ খাবারে ক্যালসিয়াম থাকেঃ চিয়া সিড, মটরশুঁটি, কাজু বাদাম, কমলা
লেবু, ব্রকলি, সয়াদুধ, সবুজ শাকসবজি। ইচ্ছে মতো ক্যালসিয়াম খাওয়া যাবে না।
অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম খেলে শরীরের ক্ষতি হতে পারে। অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ
খাবার খেলে হজম শেষে ক্ষুদ্রান্ত থেকে যেন ক্যালসিয়াম সঠিকভাবে শোষিত হয় , ও
শোষিত হবার পর শরীরের ঠিকমতো কাজে লাগে , সেজন্য প্রয়োজন, ভিটামিন -ডি। শুধু
ক্যালসিয়াম সেবন করলে প্রসবের সাথে বেরিয়ে যাবে। সেজন্য ক্যালসিয়ামের সাথে
ভিটামিন -ডি খেতে হয়। আবার ক্যালসিয়াম শরীরে যথাযথ ব্যবহার হয় সেজন্য প্রয়োজন
ভিটামিন -কে২ । ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পরেও যদি ভিটামিন-কে২
এর অভাব হয়, তাহলে এটি শরীরে যেয়ে রক্তে প্রবেশ করার পর হাড়ের বদলে এটি
রক্তনালিতে জমা হবে। এর ফলে করোনায় ধমনীর রক্তনালির মধ্যে জমা হয়ে
সেখানকার যে ব্লকেজ আছে সেগুলোর সাথে জমা হয়ে শক্ত প্লাগ তৈরি
হবে। একে কালসিফ্লাইড প্লাগ বলে। তাই শুধু ক্যালসিয়াম সেবন করলে হবে না। তার
সাথে ভিটামিন -ডি এবং ভিটামিন -কে২ সমৃদ্ধ খাবার নিয়মিত খেতে হবে।
ভিটামিন -ডি যেসব খাবার থেকে পাওয়া যায়ঃ
★ সামুদ্রিক মাছ ও মাছের তেল থেকে পাওয়া যায়।
★ মাছের কলিজা থেকে পাওয়া যায়।
★ ডিমের কুসুম থেকে পাওয়া যায়।
★ ভিটামিন- ডি যুক্ত দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার থেকে পাওয়া যায়।
★ সূর্যরশ্মি থেকে পাওয়া যায়।
কোনো উদ্ভিজ্জ খাবারে ভিটামিন- ডি থাকে না। তাই ভিটামিন- ডি অভাব হলে,
ভিটামিন-ডি সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করা।
ভিটামিন-কে২ পাওয়া যাবে যেসব খাবারেঃ
ফার্মেন্টেড খাবার, প্রাণিজ খাবার। ফার্মেন্টেড খাবার হলোঃ সয়াবিন, বাধাকপি, দুধ, চিকেন ব্রেস্ট ,ডিমের কুসুম, পনির, গরুর মাংস , গরুর কলিজা, ও হাঁসের কলিজা। এগুলোতে ভিটামিন-কে২ পাওয়া যায়। তবে ভিটামিন-কে২ পাওয়ার জন্য প্রতিদিন গরুর মাংস ,গরুর কলিজা খাওয়া হয় , তাহলে এটা শরীরের জন্য খুবই ক্ষতি হবে। যদি মাসে ১\২ বার গরুর মাংস বা কলিজা খাওয়া হয় তাহলে শরীরের জন্য সেটা উপকার। অতিরিক্ত গরুর মাংস বা কলিজা খেলে উচ্চ রক্তচাপ হতে পারে, তাই সবকিছু পরিমাণ মতো খাওয়া উচিত। এছাড়া ও সপ্তাহে ৩\৪ দিন সূর্যরশ্মিতে শরীরকে উষ্ণ করতে হবে। সূর্য রশ্মিতে রয়েছে ভিটামিন-ডি। যেটা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকার। প্রতিদিন ১ ঘণ্টা ব্যায়াম করত হবে এতে শরীর সুস্থ থাকে।
এভাবে হাড় ক্ষয় থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। তাই নিয়মিত এগুলো আমাদের মেনে চলা উচিত।
🍀আপনাদের কাছে এই পোস্টটি ভালো লাগলে, অবশ্যই লাইক, কমেন্ট, ও
শেয়ার করবেন। আজকে এই পর্যন্ত, সবাইকে অনেক ধন্যবাদ।🍀
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url