প্রতিদিন কাঠ বাদাম খেলে কি উপকার হয়

কি ভাবছেন? এই কাঠ বাদাম খেলে কি উপকার হবে? এই কাঠ বাদাম কেন খাব? প্রতিদিন কাঠ বাদাম খেলে কি কোন ক্ষতি হবে? এটা কেন খাবেন? খেলে কি হবে ? সবকিছু বিস্তারিত জানাবো।

প্রতিদিন-কাঠ-বাদাম-খেলে-কি-উপকার-হয়

 প্রতিদিন কাঠবাদাম খেলে শরীরে অনেক উপকার হয়। কাঠবাদাম শুধু একটি বাদাম নয় ,বরং একটি পুষ্টির ভান্ডার। এতে রয়েছে ভিটামিন, মিনারেল, ওমেগা 3ফ্যাটি এসিড ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের শরীরে পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করে। এবং ছোট বড় রোগের থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করে । কাঠবাদাম আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকার। 




প্রতিদিন কাঠবাদাম খেলে শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। কাঠবাদামের উপকারিতা সীমাহীন। পুষ্টিগুণে ভরপুর এ বাদাম। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়, হাড় ও দাঁত মজবুত করে, বয়সের ছাপ দূর করে, শক্তি ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, ওজন নিয়ন্ত্রণ করে, চুল ও ত্বকের জন্য উপকারী।প্রতিদিন ৪ টি কাঠবাদাম খেলে আপনিও অনেক উপকারিতা পেতে পারেন।


মস্তিষ্কের জন্য কাঠবাদাম অত্যন্ত পুষ্টিকর খাবার। কাঠবাদামের রয়েছে মিনারেল ভিটামিন ও স্বাস্থ্যকর ফ্যাট যা মানুষের মস্তিষ্কের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কাঠবাদামে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ই থাকে যা মস্তিষ্কের কোষ গুলোকে রক্ষা করে । স্মৃতিশক্তি শক্ত থাকে বয়স বেশি হয়ে গেলে ভুলে যাওয়ার  সম্ভাবনা কম থাকে।

কাঠবাদামে থাকা ম্যাগনেসিয়াম রক্তনালীকে সুস্থ রাখে ফলে মস্তিষ্ক আরো সতেজ থাকে। কাঠবাদামে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান মস্তিষ্কের কোষ গুলোকে রক্ষা করে। এবং নতুন কোষ গঠনে ভূমিকা রাখে। কাঠবাদাম কাঠবাদাম মানসিক চাপ হতাশা কমাতে সাহায্য করে।



ত্বক ও চুলের সৌন্দর্য বাড়াতে কাঠবাদামের ভূমিকা অপরিসীম। কাঠবাদামে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-ই রয়েছে যা ত্বকের কোষগুলোকে  অক্সিডেশন থেকে রক্ষা করে। এতে ত্বকের উজ্জ্বলতা ও মসৃণতা আসে। কাঠবাদামে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের কোষকে পুনরায় জীবিত করে।

 এর ফলে দাগ ও ঢিলে ভাব দূর করে। কাঠবাদামের তেল প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে। এটি ত্বকের গভীরে প্রবেশ করে। ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখে ও ত্বকের শুষ্কতা দূর করে। রাতে ঘুমানোর আগে কাঠবাদামের তেল চোখের নিচে লাগিয়ে ঘুমালে চোখের নিচের ডার্ক সার্কেল দূর হয়। এছাড়াও ত্বকের কালচে ভাব কমে যায়।

প্রতিদিন-কাঠ-বাদাম-খেলে-কি-উপকার-হয়

কাঠবাদামের তেল চুলের গোড়া মজবুত করে। কাঠবাদামে থাকা ম্যাগনেসিয়াম জিংক বায়োটিন ভিটামিন-বি৭ থাকাই চুলের মূল কে শক্ত করে এবং চুল পড়া কমাতে সাহায্য করে। কাঠবাদামের তেল প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে। এটি চুলের ভিতর পর্যন্ত পুষ্টি যোগায় চুলে রুক্ষতা দূর করে এবং চুলের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনে।

কাঠবাদামে থাকা এন্টি ব্যাকটেরিয়াল ও এন্টিফাঙ্গাল চুলের খুশকি ও চুলকানি বন্ধ করে। ফলে চুল দ্রুত লম্বাও ঘন হয়।



ওজন কমাতে কাঠ বাদামের অনেক কার্যকারিতা রয়েছে। কাঠবাদাম ক্ষুধা কমায় ও পেট ভরা রাখে। বাদামে আছে প্রোটিন ফাইবার স্বাস্থ্যকর ফ্যাট। এই উপাদানগুলো ধীরে ধীরে হজম হয় ফলে দীর্ঘ সময় পেট ভরা থাকে। এতে ক্ষুধা কমে যায়। ফলে ক্যালরি নিয়ন্ত্রণে থাকে।

কাঠবাদাম খেলে চর্বি কমাতে সাহায্য করে। রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। ও শরীরে অতিরিক্ত পানি জমা বা ফোলা ভাব কমায় এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে। তাই ওজন কমাতে কাঠবাদামের কার্যকারিতা অসীম।



হৃদ যন্ত্র ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কাঠবাদামের অনেক ভূমিকা রয়েছে। কাঠবাদাম খেলে শরীরে খারাপ কোলেস্টেরল কমায়। এবং ভালো কোলেস্টেরল বাড়ায়। এর ফলে হৃদ যন্ত্রের রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকে। এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায়। কাঠবাদাম খেলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে । ফলে হার্টের ওপর চাপ কম থাকে। কাঠবাদাম খেলে রক্ত সঞ্চালন নিয়ন্ত্রণ থাকে। তাই হৃদযন্ত্র ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে কাঠ বাদাম খাওয়া খুবই জরুরী।



ডায়াবেটিস ও হজম শক্তিতে কাঠবাদাম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কাঠবাদামে কার্বোহাইড্রেটের মাত্রা খুবই কম। ফলে রক্তের গ্লুকোজ দ্রুত বাড়ে না ও ডাইবেটিস রোগীদের জন্য অত্যন্ত উপকার হয়। নিয়মিত কাঠবাদাম খেলে শরীরে ইনসুলিনের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়। ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে হৃদরোগের ঝুঁকি বেশি থাকে। কাঠবাদাম খেলে হৃদরোগে ঝুঁকি কমে যায়।

হজম শক্তিতে কাঠবাদাম খুব ভালো কাজ করে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে ও হজমে সহায়তা করে। এটি ভাল ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি করে যা খাবার ভাঙ্গা ও শোষণ করতে সাহায্য করে। ও পেটের অ্যাসিডিটি কমাতে সাহায্য করে।



কাঠবাদাম সকালে খাওয়াই সবচেয়ে ভালো সময়। নাস্তার আগে বা নাস্তার সঙ্গে কাঠবাদাম খাওয়া খুবই উপকারী। 

প্রতিদিন-কাঠ-বাদাম-খেলে-কি-উপকার-হয়

কাঠবাদাম শুকনো খাওয়ার চেয়ে ভিজিয়ে খাওয়া বেশি পুষ্টিকর। কাঠবাদাম পানিতে ভিজিয়ে বা গরম দুধের সাথে ভিজিয়ে খেলে বেশি পুষ্টি পাওয়া যায়। সাধারণত কাঠবাদাম ৫-৬ টি খেলে শরীরের জন্য উপকার। বাদাম অনেক পুষ্টি হলেও এতে অনেক ক্যালরি থাকে। তাই প্রতিদিন ৫-৬ টি কাঠবাদাম খাওয়া যথেষ্ট। শিশুদের জন্য ২ -৩ টি খাওয়া ভালো। এবং বয়স্কদের জন্য দুধে মিশিয়ে বা পেস্ট করে খেলে সহজে হজম হয়।


প্রতিদিন অতিরিক্ত কাঠ বাদাম খেলে ওজন বাড়তে পারে। তাই পরিমাণ মত কাঠবাদাম খাওয়া উচিত। অতিরিক্ত কাঠবাদাম ভিজিয়ে না খেলে গ্যাস, পেট ফাঁপা ও কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। কাঠবাদামে অতিরিক্ত ভিটামিন-ই রয়েছেি। তাই পরিমাণের চেয়ে বেশি খেয়ে ফেললে মাথা ঘোরা, ক্লান্তি বা অন্য সমস্যা হতে পারে। সোডিয়াম ও তেল যুক্ত বাদাম খেলে রক্তচাপ বাড়ায় ও হৃদযন্ত্রের ক্ষতি হতে পারে। তাই কাঁচা  বা ভেজানো কাঠবাদাম খাওয়া শরীরের জন্য উপকার।



বাদাম একটি প্রাকৃতিক পুষ্টির ভান্ডার। যা শরীর,মস্তিষ্ক ,হৃদ যন্ত্র ত্বক ও চুলের জন্য সমানভাবে উপকারী। নিয়মিত পরিমাণ মতো ভেজানো কাঠবাদাম খেলে শরীরের শক্তি ও পুষ্টি বাড়ে।এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। মনে রাখতে হবে, যতটা এটি উপকার। অতিরিক্ত খেলে ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। তাই পরিমাণ মতো নিয়মিত ভিজানো কাঠবাদাম খাওয়া শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারি।


আপনাদের এ পোস্টটি ভাল লাগলে। অবশ্যই লাইক, কমেন্ট ও শেয়ার করবেন। সবাইকে অনেক ধন্যবাদ।🍀



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url